গড়ে তুলুন দুপুরের খাবার খাওয়ার স্বাস্থ্যকর অভ্যাস

দুপুরে খাওয়ার পর ঝিমঝিম ভাব কাটাতে দূরে রাখতে হবে শ্বেতসার-জাতীয় খাবার।

দুপুরের খাবারের বিষয়টাকে খুব একটা গুরুত্ব দেওয়ার সুযোগ হয় না। কাজের চাপ, গরম আবহাওয়া ইত্যাদি কারণে অনেকেই নাকে মুখে পেটে চালান করেন যে কোনো খাবার। দুপুরের আগে কোনো সুখবর পেলে কেউ গলা ডুবিয়ে খান আবার কেউ হয়ত কোনো কারণে মন খারাপ থাকায় খালি পেটেই কাটিয়ে দেন।

স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানানো হল দুপুরে স্বাস্থ্যকর কিছু খাবার খাওয়ার অভ্যাস সম্পর্কে। কারণ শুধু খাবারই গুরুত্বপূর্ণ নয়, পরিবেশটাও গুরুত্বপূর্ণ।

নিজের খাবার নিজে তৈরি: অবিবাহিত কর্মজীবীদের প্রতিদিন বাইরে খাওয়ার পেছনে অতি প্রচলিত অজুহাত সকালে খাবার তৈরির সময় হয় না। তবে আগের রাতের অতিরিক্ত খাবার কিন্তু পরের দিনের স্বাস্থ্যকর দুপুরের খাবার হতে পারে। ঘর থেকে আনা খাবারের দুটি বড় ধরনের সুবিধা হল এতে খরচ কমে এবং আপনি জানেন খাবারটা কতটুকু নিরাপদ।

ব্রিটিশ ডায়াটেটিক অ্যাসোসিয়েশন’য়ের পুষ্টিবিদ ও মুখপাত্র গিলিয়ান কিলিনার বলেন, “রেস্তোরাঁর খাবার হওয়া উচিত একেবারে শেষ উপায়। কারণ এতে থাকতে পারে অস্বাস্থ্যকর উপকরণ কিংবা রান্না করা হয়েছে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কিংবা দুটোই হতে পারে। যা ক্ষতিকর এবং তৃপ্তিহীন।”

কাজের টেবিলে খাওয়া নয়: খাওয়ার জায়গা আর কাজের জায়গা এক হওয়া উচিত নয়। সেক্ষেত্রে মনোযোগ কাজেই পড়ে থাকবে, খাবারে নয়, যার ফল হতে পারে ওজন বৃদ্ধি।

কিলিনার বলেন, “অন্ত্র থেকে মস্তিষ্ক পর্যন্ত সংবেদনশীল গ্রন্থিগুলো এক্ষেত্রে সঠিকভাবে কাজ করবে না, ফলে খাওয়ার পরও অতৃপ্ত রয়ে যাবেন এবং আরও খেতে ইচ্ছা হবে। কুঁজো হয়ে বসে অমনোযোগী অবস্থায় এবং ভালোভাবে না চিবিয়ে খাওয়া অন্ত্রের বিভিন্ন অসুখের কারণ।”

শরীরচর্চা: গড় হিসেবে অফিস থেকে দুপুরের খাবার খাওয়ার বিরতি মেলে প্রায় এক ঘণ্টা। তবে সময়টুকুর সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারলে এরই মাঝে সামান্য কসরত করে ফেলা অসম্ভব নয়। অফিসের প্রেক্ষাপটে কসরত হতে পারে হাঁটাহাঁটি, সামান্য ‘স্ট্রেচিং’ ইত্যাদি, তবে তা হতে হবে খাওয়া পরে নয়, আগে।

পানি পান: কিলিনার বলেন, “কিছুক্ষণ পরপর পানির বোতলে চুমুক দেওয়া পানি পানের সর্বোত্তম উপায়। খাওয়ার আগে পরে অতিরিক্ত পানি পান করলে পেট ফোলাভাব দেখা দিতে পারে, হতে পরে বুক জ্বালাপোড়াও। একবেলার খাবারের সঙ্গে ২৫০ মি.লি. লিটার পানি যথেষ্ট। তবে কিলিনারের উপদেশ হল খাওয়ার আধা ঘণ্টা আগে আধা লিটার পানি পান করা। এতে ক্ষুধা কমে যাবে, ফলে খাবারের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হবে।

খাওয়া পরে আলস্য: দুপুরের খাবার খাওয়ার পর ভাতঘুমের তীব্র ইচ্ছা কিংবা ‘ডেজার্ট’ খাওয়ার লোভ হওয়ার পেছনে দায়ী আসলে কী খেয়েছেন সেটার ওপর নির্ভর করে। ভাত, অতিরিক্ত রুটি, পাস্তা, আলু ইত্যাদি ‘কার্বোহাইড্রেইট’য়ে ভরপুর খাবারই আসলে আলসেমির কারণ।

কিলিনার বলেন, “তেলওয়ালা মাছ, সামুদ্রিক খাবার, লাল চালের ভাত, ওটস কেক, রঙিন সবজি ইত্যাদি হবে আদর্শ বিকল্প।”

ভাতের পরিমাণ কমিয়ে তরকারি বেশি করে খাওয়াই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *