শরীরের জন্য রাতের খাবারের গুরুত্ব

লাইফস্টাইল ডেস্ক- রাতে মানুষের শরীর কম সক্রিয় থাকে। এ কারণে ক্যালরিও কম খরচ হয়। তাই ওজন বাড়ানোর ভয়ে অনেকেই রাতের খাবার একেবারেই এড়িয়ে চলেন। অনেকে আবার সাঁতপাঁচ না ভেবেই প্রয়োজনের তুলনায় রাতে বেশি ক্যালরি গ্রহণ করে থাকেন। এটিও ঠিক নয়।

রাতের খাবার ওজন বাড়ানো নয়, বরং কমাতে ভূমিকা রাখে –এমনটিই বলছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেছেন, এমন কিছু নির্দিষ্ট খাবার আছে যা রাতে খেলে তা কাঙ্ক্ষিত ফিটনেস অর্জনে সহায়তা করে।

বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, সঠিক পরিস্থিতিতে রাতে খাবার খাওয়া খারাপ নয়। তবে অবশ্যই রাতে জাঙ্ক ফুড খাওয়া থেকে নিজেদের বিরত রাখুন। রাতে খাবার খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ, তবে কম ক্যালরি গ্রহণ করুন।

লাইফস্টাইলবিষয়ক ওয়েবসাইট লাইফস্ট্রং ডটকমে রাতের খাবার খাওয়ার চার বিস্ময়কর উপকারিতার কথা জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখে

রাতে ভালো ঘুম না হলে পরের দিনের শুরুটা ভালো হয় না। আমেরিকান জার্নাল অব ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, আপনি রাতের খাবারে কী খাবেন তা পরের দিন সকালে খাওয়া পর্যন্ত আপনার শরীরে প্রভাব ফেলে। যেসব লোক রাতে কম গ্লাইসেমিক খাবার খান পরের দিন সকাল পর্যন্ত তাদের শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকে। এটা শুধু তাদের ওজন কমাতেই ভূমিকা রাখে না, একইসঙ্গে তাদের স্বাস্থ্য ভালো রাখতেও সাহায্য করে। এ ক্ষেত্রে কম গ্লাইসেমিক যুক্ত খাবার হলো—ডাল, মটরশুঁটি, মিষ্টি আলু বা সবুজ শাকসবজি। সঙ্গে রাখতে পারেন সামান্য প্রোটিন, যেমন—মুরগির মাংস কিংবা স্যামন মাছ।

শক্তি পুনরুদ্ধারে সাহায্য করে

সুস্বাস্থ্য রক্ষায় এবং শরীরের হজমপ্রক্রিয়া ঠিক রাখতে ব্যায়ামের বিকল্প নেই। ব্যায়াম করার পর আপনার মাংসপেশী আরও বেশি করে কার্বহাউড্রেট শোষণ করে। একটানা ৪৫ মিনিট ব্যায়াম করার পর আপনার শরীরের যে শক্তি ক্ষয় হয় তা পুনরুদ্ধারে পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত। কাজেই ব্যায়ামের পর কখনোই কার্বহাউড্রেট ছেড়ে দেওয়া উচিত নয়। এ জন্য খেতে পারেন মিষ্টি আলু এবং কলা। এগুলো আপনার মাংসপেশীতে শক্তির যোগান দেবে। ফলে পরের দিনের ব্যায়ামের জন্য আপনার শরীর আবারও প্রস্তুত হবে।

ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করে

রাতে ক্রাবজাতীয় খাবার খেলে তা আপনার ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। ২০১১ সালে ৬৩ জন স্থুলকায় নারী এবং পুরুষ পুলিশ কর্মকর্তার ওপর করা এক গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব কর্মকর্তা দিনে কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ করেছেন তাদের চেয়ে যারা রাতের খাবারে কার্বহাইড্রেটকে প্রাধান্য দিয়েছেন তাদের হরমোনে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এসেছে। একই সঙ্গে তাদের ক্ষুধাও কমে গেছে। এর ফলে ওজন কমাতেও তারা সফল হয়েছেন। এ ছাড়া ওজন কমানোর দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া নিয়ে নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিনের এক গবেষণায়ও এর প্রমাণ মিলেছে। কাজেই ওজন কমাতে চাইলে প্রতিদিন নির্দিষ্ট পরিমাণ ক্যালোরি খাওয়ার প্রতি জোর দিন। এ ক্ষেত্রে অবশ্যই সন্ধ্যার খাবারের দিকে নজর দেওয়া বেশি জরুরি বলে জানিয়েছে বিশেষজ্ঞরা।

মাংসপেশী গঠনে সাহায্য করে

একটি প্রবাদ প্রচলিত আছে যে, শোয়ার আগে খেলে ঘুমানোর সময় সেই খাবার হজম হতে চায় না। আসলে এই কথার কোনো সত্যতা নেই। আপনি ঘুমাতে গেলেও কিন্তু আপনার শরীর কাজ বন্ধ করে না। শোয়ার আগে রাতের খাবার আপনার মাংসপেশী গঠনে সাহায্য করে। এ জন্য স্বাস্থ্য সুরক্ষায় রাতের খাবারে রাখতে পারেন প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার, যেমন—দুধ, পনির, দই প্রভৃতি।

সুত্র ঃ সময়ের কন্ঠসর

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *