ঢাকা মেডিকেল থেকে শিশু চুরির দায়ে দুজনের যাবজ্জীবন

এক যুগ আগে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে নবজাতক শিশু চুরি করে পাচারের দায়ে দুজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।

খিলগাঁও থানায় করা এই মামলায় মঙ্গলবার ঢাকার তৃতীয় মানব পাচার দমন ট্রাইবুনালের বিচারক জয়শ্রী সমাদ্দার এই রায় দেন।

দণ্ডিতরা হলেন গাজীপুরের বোর্ডবাজার কুনিয়াপাচু এলাকার ঝর্না বেগম এবং নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার চাঁনমারা বস্তির মানিক।

তাদের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানাও করা হয়েছে। এই অর্থ দিতে ব্যর্থ হলে আরও ৬ মাস কারাভোগ করতে হবে তাদের।

রায় শুনে কাঠগড়ায় দাঁড়ানো দণ্ডিত মানিক কান্নায় ভেঙে পড়েন। ঝর্না রয়েছেন পলাতক।

রায়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দারোয়ান আব্দুল মতিন এবং বিশেষ আয়া শিলাকে খালাস দেওয়া হয়েছে। শিলাও পলাতক।

ঢাকা মেডিকেল থেকে নবজাতক চুরির অভিযোগে ২০০৫ সালের ডিসেম্বরে ঢাকার সবুজবাগ থানায় মামলাটি হয়। শিশুটির বাবা মনিরুল ইসলাম এটি দায়ের করেন।

ওই মামলায় আসামি ঝর্না, মানিক, শিলা, মতিনকে  অব্যাহতির সুপারিশ দিয়ে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় পুলিশ। আসামিরা তখন ঢাকার পঞ্চম নারী ও মিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল থেকে অব্যাহতিও পেয়ে গিয়েছিলেন।

কিন্তু পরে পুলিশ খিলগাঁও থানার রামপুরা ওয়াপদা রোডের একটি বাড়ি থেকে এক নবজাতক শিশুসহ এক নারীকে আটক করেছে। ওই নারী স্বীকার করেন যে শিশুটি তার নিজের নয়। সেখানে আরও একটি শিশুর সন্ধানও মেলে।

পরে পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে  আসে, শিশু দুটিকে ঢাকা মেডিকেল থেকে ঝর্না ও মানিক চুরি করে এনেছিলেন। তাদের সহায়তা করেন দারোয়ান মতিন ও আয়া শিলা।

পরে খিলগাঁও থানায় ২০০৬ সালের জানুয়ারিতে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে নতুন মামলা হয়। ওই মামলারই রায় হল মঙ্গলবার।

তদন্ত কালে আসামিরা হাকিমের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। রাষ্ট্রপক্ষে সাক্ষ্য দেন নয়জন।

রাষট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন এ ট্রাইবুনালের বিশেষ কৌঁসুলি মাহমুদা আক্তার। আসামি পক্ষে ছিলেন মোকসেদ আলী আকন্দ।

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *