সাতক্ষীরা মেডিকেল : মাটির নিচে ১৫ বস্তা ওষুধ, তদন্ত কমিটি গঠন

সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ক্যাম্পাসে মাটির নিচে পুঁতে রাখা বিপুল পরিমাণ সরকারি ওষুধ উদ্ধারের ঘটনা তদন্তে পৃথক দুটি কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। উভয় কমিটিকেই আগামী সাতদিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল জানান, এ ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছেন তিনি। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. বদিউজ্জামানকে প্রধান করে গঠিত এ কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি, সিভিল সার্জনের প্রতিনিধি, মেডিকেল কলেজ অধ্যক্ষের প্রতিনিধি এবং সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দেবাশীষ চৌধুরী। কমিটিকে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

এদিকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. শাহজাহান আলি জানান, এ ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ইউরোলজি বিভাগের ডা. রুহুল কুদ্দুসকে আহ্বায়ক করে গঠিত এ কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন ডা. প্রবীর কুমার বিশ্বাস ও ডা. আক্তারুজ্জামান। এ কমিটিকে আগামী সাতদিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন প্রদানের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

গত শনিবার দুপুরে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চত্বরের সেপটিক ট্যাংকের কাছ থেকে মাটিতে পুঁতে রাখা অবস্থায় ১৫ বস্তা ওষুধ উদ্ধার করা হয়। এদিন ভোরে বৃষ্টির কারণে মাটি ধুয়ে গেলে ওষুধভর্তি বস্তাগুলো বেরিয়ে পড়ে এবং সবার নজরে আসে। সেখান থেকে উদ্ধার করা হয় বিভিন্ন ধরনের ওষুধ. ক্যানোলা, জিপসোনা, গজ ব্যান্ডেজ ও চিকিৎসাসামগ্রী।

পুলিশ উদ্ধার হওয়া এসব ওষুধের স্যাম্পল নিয়ে গেলেও এখনো প্রায় সব ওষুধই সেখানে পড়ে রয়েছে। কয়েকজন আনসার সদস্য এলাকাটি ঘিরে রেখেছেন। সাতক্ষীরা সদর থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ওষুধ চুরির ঘটনায় গঠিত দুই তদন্ত কমিটির সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তা প্রত্যক্ষ করার পর সেসব ওষুধ পুলিশ হেফাজতে নিয়ে আসা হবে।

হাসপাতাল চত্বরে মাটির নিচে পুঁতে রাখা ওষুধের বিষয়ে জানতে চাইলে হাসপাতালটির তত্ত্বাবধায়ক ডা. শাহজাহান আলি বলেন, উদ্ধার হওয়া কোনো ওষুধের গায়ে সরকারি সিল নেই। এতে লাল-সবুজ চিহ্নও নেই। এ ওষুধ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের স্টোরের নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা যে গজ ব্যান্ডেজ ব্যবহার করি তা থান কাপড়ের তৈরি। অথচ যা পাওয়া গেছে তা কাগজের। তা ছাড়া স্টোরে থাকা কোনো ওষুধ খোয়া যায়নি বলে স্টোরকিপার আহসান হাবিব ও স্টোর অফিসার বিভাস চন্দ্র জানিয়েছেন।’

তিনি আরো বলেন, ওষুধ ক্রয় বা গ্রহণের পর সার্ভে কমিটি দিয়ে তা পর্যবেক্ষণ করানো হয়। সেসব তালিকা অনুসরণ করলে পরিষ্কার হবে যে এ ওষুধ সরকারি নয়। এমনকি তার স্টোর থেকে তা খোয়া যায়নি।

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *