লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের ওষুধ ‘খোয়া’, স্টোর কিপারকে স্ট্যান্ড রিলিজ

লালমনিরহাট সদর ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে প্রায় ৩২ লাখ টাকার ওষুধের হিসাব মিলছে না। অভিযোগে স্টোর কিপার মো. সাহেদুল হক ছোটনকে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে। ওষুধের মজুদে পর্যালোচনায় গঠিত স্পেলাশ সার্ভে কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে গত ২৩ মে তার বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেয়া হয়।

জানা গেছে, ওষুদের মজুদ পর্যালোচনায় লালমনিরহাট সদর ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. গোলাম মোহাম্মদ গত ৩০ এপ্রিল তিন সদস্যের একটি স্পেশাল সার্ভে কমিটি গঠন করেন। কমিটি প্রধানের দায়িত্ব দেয়া হয় হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট (মেডিসিন) ডা. মো. আব্দুল বাসেতকে। এ কমিটি গত ২২ মে প্রতিবেদনে জমা দেয়।

প্রতিবেদনে ৩৪ ধরনের ওষুধের মজুদে গরমিল পাওয়ার কথা জানানো হয়, যার আনুমানিক বাজারমূল্য ৩০ থেকে ৩২ লাখ টাকা। এ প্রতিবেদন পাওয়ার পর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. গোলাম মোহাম্মদ গরমিলের বিষয়টি রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. অমূল্য চন্দ্রকে অবহিত করেন। এরই প্রেক্ষিতে প্রশাসনিক কারণের কথা উল্লেখ করে গত ২৩ মে ডা. অমূল্য চন্দ্র সাহা স্বাক্ষরিত এক আদেশে হাসপাতালের স্টোর কিপার সাহেদুল হক ছোটনকে নীলফামারীর ডিমলা ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়।

এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. গোলাম মোহাম্মদ বলেন, ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে ওষুধ ক্রয়ের দরপত্র ২০১৮ সালের জুলাইয়ে সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বদলিজনিত কারণে সেই সময়ে দরপত্র করা হয়নি। আমি ২০১৮ সালের ১১ নভেম্বর তত্বাবধায়ক পদে যোগদানের পর দরপত্র প্রক্রিয়ার কাজে হাত দেই। ওই সময় হাসপাতালের ওষুধের স্টক রেজিস্টার ও সরবরাহ রেজিস্টারের মধ্যে অসংগতি দেখতে পাই। প্রকৃত ঘটনা কী সেটা জানতে পরবর্তীতে একটি কমিটি গঠন করা হয়।

হাসপাতালের রেসিডেন্ট মেডিকেল অফিসার ও সার্ভে কমিটির সদস্য সচিব ডা. মো. আমিনুর রহমান জানান, কিছু ঔষধ রেজিস্টারে আছে, কিন্তু গোডাউনে নেই। কিছু ঔষধ সরবরাহ দেখানো হয়েছে, কিন্তু সরবরাহ করা হয়নি। রেজিস্টারে ঘঁষামাজা ও ওভাররাইটিং করা হয়েছে। এসব বিষয় অধিকতর তদন্তের জন্য রংপুর থেকে একটি তদন্ত টিম আসার কথা রয়েছে। তাদের তদন্ত শেষে হয়তো আরো বিস্তারিত জানা যাবে।

কমিটির প্রধান ডা. মো. আব্দুল বাসেত বলেন, সার্ভেকালে স্টক ও সরবরাহ পর্যালোচনায় ৩৪ প্রকারের ওষুধে গরমিল পাওয়া গেছে। টাকার অংকে প্রায় ৩০-৩২ লক্ষ টাকার ওষুধ নেই। অধিকতর তদন্তে এই টাকা বা ঔষধের পরিমাণ আরো বাড়তে পারে।

স্টোর কিপার মো. সাহেদুল হক ছোটন ওষুধের মজুদে গরমিল পাওয়ার তথ্য স্বীকার করে বলেন, আমি ফার্মাসিস্টকে সঠিকভাবে ওষুধ সরবরাহ করেছি। কিন্তু রেজিস্টারে হাতের লেখা এবং ঘষামাঁজা থাকার কারণে আমাকে দোষারোপ করা হচ্ছে। এখন কী হবে বুঝতে পারছি না।

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *