বাড়ছে অসংক্রামক রোগব্যাধি

দেশের মানুষের গড় আয়ু বাড়ছে। আর সেই সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা। গত কয়েক বছর ধরে ডায়াবেটিক, শ্বাসতন্ত্রের দীর্ঘস্থায়ী রোগ (সিওপিডি), হৃদরোগ, স্ট্রোক, ক্যানসারসহ নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। তবে এসব বিষয়ে যদি এখনই সচেতন না হলে অদূর ভবিষ্যতে এটি মহামারী আকার ধারণ করার আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

তারা বলছেন, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, স্ট্রোক, ক্যানসারের মতো এসব রোগে আক্রন্ত মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। ভয়াবহ, দীর্ঘমেয়াদি ও ব্যয়বহুল এসব রোগের কারণে তাৎক্ষণিকভাবে মৃত্যু না হলেও শারীরিক, মানসিক ও অর্থনৈতিকভাবে দীর্ঘ ভোগান্তির শিকার হচ্ছে মানুষ।বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যানুযায়ী, পৃথিবীতে ৬৩ ভাগ মানুষের মৃত্যুর জন্য দায়ী বিভিন্ন অসংক্রামক রোগ। আর অসংক্রামক রোগজনিত মৃত্যুর ৮২ ভাগই হচ্ছে ডায়াবেটিস, ফুসফুসের দীর্ঘমেয়াদি রোগ, ক্যানসার এবং কার্ডিওভাসকুলার রোগের কারণে। জানা গেছে, সারাবিশ্বে অসংক্রামক রোগে আক্রান্তদের মধ্যে ২০ শতাংশ স্নায়ুরোগী। এর অধিকাংশই উন্নয়নশীল দেশে এবং এসব রোগীর বড় অংশই মূলত স্ট্রোক ও মৃগী রোগে আক্রান্ত।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের শিক্ষক ডা. সবুর বলেন, মানুষের গড় আয়ু আগের থেকে অনেক বেড়েছে। যার ফলে ডায়াবেটিক, হৃদরোগ, স্ট্রোক, ক্যানসারসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যাও বাড়ছে। এছাড়া আমরা প্রতিদিন যেসব খাবার গ্রহণ করছি সেগুলোতে কেমিক্যালের মিশ্রণ থাকে। ফলে মানুষ অসংক্রামক রোগে ব্যাপকভাবে আক্রান্ত হচ্ছে। ভয়াবহ, দীর্ঘমেয়াদি ও ব্যয়বহুল এসব রোগের কারণে তাৎক্ষণিকভাবে মৃত্যু না হলেও শারীরিক, মানসিক ও অর্থনৈতিকভাবে দীর্ঘ ভোগান্তির শিকার হচ্ছে মানুষ। তিনি বলেন, বর্তমানে দেশের ৬১ শতাংশ মানুষ অসংক্রামক রোগে ভুগছে। এ বিষয়ে এখনই সচেতন না হলে অদূর ভবিষ্যতে এটি মহামারী আকার ধারণ করবে।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ আব্দুল হামিদ বলেন, বাংলাদেশে অসংক্রামক রোগ বেড়ে যাবার পেছনে শারীরিক পরিশ্রম না করা, ভেজাল এবং দূষণজনিত খাবার, প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থান গ্রহণ না করার মতো বিষয়গুলোতে ঘাটতি রয়েছে। এ বিষয়ে মানুষকে সচেতন হতে হবে। পাশাপাশি জনসাধারণের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত এবং গণমুখী করতে সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলো বিশেষ করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোকে যথাযথ কার্যকর করতে হবে, সেখানে গিয়ে যেন গ্রামের মানুষ সেবা পায় সেটা নিশ্চিত করতে হবে।স্বাস্থ্য সর্ম্পকিত বিষয়গুলো আসলে মাল্টি মিনিস্ট্রিয়াল বিষয় মন্তব্য করে সৈয়দ আব্দুল হামিদ বলেন, স্বাস্থ্য কখনও এক স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাজ নয়। পানির কোয়ালিটি, পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা, খাদ্যবিষয়ক বিভিন্ন সমস্যা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাজ নয়, অন্যান্য মন্ত্রণালয়কেও এগিয়ে আসতে হবে। এখানে ‘ইন্টার মিনিস্ট্রিয়ালকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। নানা অব্যবস্থাপনার কারণে অসংক্রামক রোগের প্রার্দুভাব বাড়ছে।

About Post Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *